প্রকাশিত: Sat, Feb 18, 2023 4:11 PM
আপডেট: Tue, Jun 17, 2025 7:09 PM

আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে উলফার কোনো সম্পর্ক ছিল না: অনুপ চেটিয়া

মাছুম বিল্লাহ: বাংলাদেশে যখন উলফার ডিপ্লোমেটিক ঘাঁটি ছিল তখন শুধু আওয়ামী লীগ বা বিএনপি নয়; অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও কোনো প্রকার সম্পর্ক বা যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছেন অনুপ চেটিয়া।

আমাদের নতুন সময়কে সম্প্রতি ঢাকায় দেয়া এক সাক্ষাতকারে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) আলোচনাপন্থী অংশের শীর্ষ এই নেতা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের দশ ট্রাক অস্ত্র, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের অস্ত্র, বগুড়ার কাহালু, মৌভীবাজারের সাতছড়ির অস্ত্রের চালান কিন্তু উলফার একার চালান নয়। আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর অস্ত্রের চালান ছিল। তবে আমি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ঢাকায় উলফার কোনো ক্যাম্প ছিল না। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাতছড়ি, শ্রীমঙ্গল, হালুয়াঘাট, বগুড়া কাহালুতে ক্যাম্প তৈরি হয়। তবে সেগুলো সম্পর্কে খুব একটা তথ্য আমার জানা নেই। 

বৈধভাবে বাংলাদেশে এসে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন। গোপনীয়তা রক্ষা করে ঢাকায় এসে তার মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। গত নভেম্বরে তিনি একমাত্র মেয়ে বন্যা বড়ুয়াকে কুমিল্লার ছেলে অনির্বান চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। অনির্বান অস্টেলিয়ার মেলবোর্নে থাকেন।

এক প্রশ্নের জবাবে অনুপ চেটিয়া বলেন, আমরা প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলাম ১৯৮৮ সালে। সে বছর আসাম-বাংলাদেশে বন্যা হয়েছিল। আমরা চিন্তা করছিলাম বাংলাদেশে একটা ঘাঁটি করব যেটা ডিপ্লোমেটিক ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে। কারণ বার্মায় ঘাঁটি ছিল। কিন্তু সেখানে এত বড় পাহাড়, কমিউনিকেশন করার কোন সিস্টেম ছিল না। এ কারণে বাংলাদেশে ঘাঁটি গড়বো, যেটা দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়া যাবে। বাংলাদেশে আসামের অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। আবার ওখানেও আছে। আমরা তাদের সঙ্গে এদেশে এসেছিলাম। কারণ তখন বর্ডারে তত কড়াকড়ি ছিল না। স্থায়ীভাবে থাকতাম না। যখন প্রয়োজন হত, আসতাম। আবার ফিরে যেতাম। এরপর ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর আমি আমার পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসি। কারণ আসামে আর্মির অপারেশন চলছিল।


ঢাকায় সরকারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই সময় কারো সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়নি। ১৯৮৮ সালে আসার সময় এরশাদ সরকারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। এমনকি ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। ঢাকায় যেসব অসমীয়া পরিবার যাদেরকে গরিয়া বলা হয়, তাদের সঙ্গে আমাদের সব সময় যোগাযোগ হত। যেমন ঢাকা ব্যান্ডের গায়ক মাকসুদ কিন্তু এখনও অসমীয়া ভাষায় কথা বলে। এরকম পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হত।

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে উলফাকে নিয়ে একটা সমস্যা হল। তবে বাংলাদেশ দিয়ে কোনো অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মত অবস্থা হল।

২০০৪ সালে বাংলাদেশে ধরা পড়া ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান কি উলফার ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই সময় আমি জেলখানায় ছিলাম। অনেকেই তো বলে এটা নাকি উলফার অস্ত্রের চালান। আমি তো সরাসরি বলতে পারব না যে ওখানে উলফার অস্ত্র ছিল কি না। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব